লাকসাম মিডিয়া গ্যালারী

#htmlcaption1 লাকসাম মাল্টি-মিডিয়া হাউস লাকসাম মাল্টি-মিডিয়া হাউস লাকসাম মাল্টি-মিডিয়া হাউস lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected lakshamlive Stay Connected

Tuesday, 23 May 2017

মেরাজ

আরবি অর্থ সিঁড়ি উর্ধগমন, আরোহণ । ع ر جধাতু হইতে শব্দটির উৎপত্তি, বহুবচনে মা'আরিজ ।
মিরাজ নবী করিম (দঃ) এর মুজিযাসমূহের মধ্যে মেরাজ গমন একটি বিস্ময়কর মোজেজা । এ জন্যই মেরাজের ঘটনা বর্ননা করার আয়াতের শুরুতেই আল্লাহ্‌ পাক 'সোবহানাল্লাহ্‌' শব্দটি ব্যবহার করেছেন যা আশ্চর্য্যজনক ঘটনার সময়ই ব্যবহার করা হয় । স্বশরীরে মেরাজ গমনের প্রমান স্বরূপ কোরআনের 'বিআব্‌দিহী' শব্দটি তাৎপর্য্যপূর্ন । কেননা 'আব্‌দুন' শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয় রুহ ও দেহের সমষ্টিকে । তদুপরি বোরাক প্রেরন ও বোরাক কর্তৃক নবী করিম (দঃ) কে বহন করে নিয়ে যাওয়ার মধ্যেও স্বশরীরে মেরাজ গমনের প্রমান পাওয়া যায় । স্বপ্নে বা রুহানীভাবে মেরাজের দাবী করা হলে কোরাঈশদের মধ্যে এত হৈ চৈ হতো না । আহ্‌লে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের পূর্ববর্তী সকল ইমামগনই স্বশরীরে মেরাজ গমনের কথা স্বীকার করেছেন ।
মিরাজের ঘটনাটি নবীজির জীবনে গুরুত্বপূর্ন এজন্য যে, এর সাথে গতির সম্পর্ক এবং সময় ও স্থানের সঙ্কোচনের তত্ত্ব জড়িয়ে আছে । সূর্যের আলোর গতি সেকেন্ডে একলক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল । পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌঁছাতে সময় লাগে আট মিনিট বিশ সেকেন্ড । এ হিসেবে পৃথিবী হতে সূর্যের দূরত্ব নয় কোটি তিরিশ লক্ষ মাইল । অথচ নবী করিম (দঃ) মূহুর্তের মধ্যে চন্দ্র, সূর্য, সিদরাতুল মোন্তাহা, আরশ-কুরছি ভ্রমন করে লা-মাকানে খোদার দীদার লাভ করে নব্বই হাজার কালাম করে পুনরায় মক্কা শরীফে ফিরে এলেন । এসে দেখলেন বিছানা এখনো গরম রয়েছে । এর চেয়ে আশ্চর্য আর কি হতে পারে ? নবী করিম (দঃ) এর গতি কত ছিল-- এ থেকেই অনূমান করা যায় । কেননা তিনি ছিলেন নূর ।
মেরাজের মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো-- অন্যান্য নবীগনের সমস্ত মোজেজা নবী করিম (দঃ) এর মধ্যে একত্রিত হয়েছিল । হযরত মুছা (আঃ) তূর পর্বতে খোদার নামে কালাম করেছেন । হযরত ঈছা (আঃ) স্বশরীরে আকাশে অবস্থান করেছেন এবং হযরত ইদ্রিছ (আঃ) স্বশরীরে বেহেস্তে অবস্থান করছেন । তাঁদের চেয়েও উন্নত মকামে বা উচ্চমর্যায় আল্লাহ্‌ পাক নবী করিম (দঃ) কে নিয়ে সবার উপরে তাকে মর্যাদা প্রদান করেছেন । মুছা (আঃ) নিজে গিয়েছিলেন তূর পর্বতে । আর আমাদের প্রিয় নবী করিম (দঃ) কে আল্লাহ্‌ তাআলা দাওয়াত করে বোরাকে চড়িয়ে ফেরেস্তাদের মিছিল সহকারে বায়তুল মোকাদ্দাছে নিয়েছিলেন । সেখানে সমস্ত নবীগনকে স্বশরীরে উপস্থিত করে হুজুর করিম (দঃ) এর মোক্তাদী বানিয়েছিলেন । সেদিনই সমস্ত নবীগনের ইমাম হতে নবী করিম (দঃ) 'নবীগনেরও নবী' বাস্তবে প্রমানিত হয়েছিলেন । সমস্ত নবীগন অষ্ট অঙ্গ (দুই হাত, দুই পা, দুই হাটু, নাক ও কপাল) দিয়ে স্বশরীরে নামাজ আদায় করেছিলেন সেদিন । সমস্ত নবীগন স্বশরীরে জীবিত, তারই বাস্তব প্রমান মিলেছিল মেরাজের রাত্রে ।
সমস্ত নবীগণ আপন আপন রওযায় জীবিত আছে
— হাদীস

মেরাজের রাত্রে নবী করিম (দঃ) কে প্রথম সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল জিব্রাইল, মিকাইল ও ইস্রাফিল ফেরেস্তাত্রয়ের অধীনে সত্তর হাজার ফেরেস্তা দিয়ে । দ্বিতীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল নবী (আঃ) গনের মাধ্যমে । তৃতীয় সম্বর্ধনা দেয়া হয়েছিল আকাশের ফেরেস্তা ও হুর দিয়ে এবং চতুর্থ ও শেষ সম্বর্ধনা দিয়েছিলেন স্বয়ং আল্লাহ্‌ তাআলা । সিদ্‌রাতুল মোন্তাহা ও আরশ মোয়াল্লা অতিক্রম করার পর স্বয়ং আল্লাহ তাআলা একশত বার সম্বর্ধনামূলক বাক্য ادن منى يا محمد অর্থাৎ 'হে প্রিয় বন্ধু মোহাম্মদ, আপনি আমার অতি নিকটে আসুন'-- বলে নবী করিম (দঃ) কে সম্মানীত করেছিলেন । কোরআন মজিদে ثُمَّ دَنَا فَتَدَ لَّى আয়াতটি এদিকেই ইঙ্গিতবহ বলে তাফসীরে মুগ্‌নী ও মিরছাদুল ইবাদ গ্রন্থদ্বয়ের বরাত দিয়ে রিয়াজুন্নাছেহীন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে । উক্ত কিতাবখানা সাত শত বৎসর পূর্বে ফারসি ভাষায় লিখিত । লেখকের নিকট কিতাবখানা সংরক্ষিত আছে ।
মিরাজের ঘটনা ঘটেছিল ১১ বৎসর ৫ মাস ১৫ দিনের মাথায় । অর্থাৎ প্রকাশ্য নবুয়তের ২৩ বৎসর দায়িত্ব পালনের মাঝামাঝি সময়ে । সে সময় হুজুর (দঃ) এর বয়স হয়েছিল ৫১ বৎসর ৫ মাস ১৫ দিন । সন ছিল নবুয়তের দ্বাদশ সাল । তিনটি পর্যায়ে মেরাজকে ভাগ করা হয়েছে । মক্কাশরীফ থেকে বায়তুল মোকাদ্দাছ পর্যন্ত মেরাজের অংশকে বলা হয়ে ইস্‌রা বা রাত্রি ভ্রমন । বায়তুল মোকাদ্দাছ থেকে সিদ্‌রাতুল মোন্তাহা পর্যন্ত অংশকে বলা হয় মেরাজ । সিদ্‌রাতুল মোন্তাহা থেকে আরশ ও লা-মকান পর্যন্ত অংশকে বলা হয় ই'রাজ; কিন্তু সাধারনাভাবে পূর্ন ভ্রমণকেই এক নামে মেরাজ নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে । কোরআন, হাদিসে মোতাওয়াতির এবং খবরে ওয়াহে দ্বারা যথাক্রমে এই তিনটি পর্যায়ের মিরাজ প্রমানিত ।
তথ্যসূত্র
  • নূরনবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (লেখকঃ অধ্যক্ষ হাফেয মুহাম্মদ আব্দুল জলিল (রহঃ) (এম এম, এম এ, বিসিএস))

0 comments:

Post a Comment