গ্রাফিক্যাল অপারেটিং সিস্টেম এর প্রতি মানুষের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রেক্ষিতে ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে মাইক্রোসফট তার ডস (ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম) এর বাড়তি সুবিধা হিসাবে উইন্ডোজ বাজারে আনে। এর পর থেকেই এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যপকভাবে  ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

উইন্ডোজ ২.০         : এতে উন্নত কিবোর্ড শর্টকাটের ব্যবস্থা ছিল এবং এটিতেই ”ম্যক্সিমাইজ ও মিনিমাইজ” পরিভাষাগুলি প্রথম ব্যবহৃত হয়। যা উইন্ডোজ ১.০ তে আইকনাইজ ও জুম নামে পরিচিত ছিল।
Win2.0
উইন্ডোজ ৩.০         : এতে গ্রাফিক্যাল  ইন্টারফেইজটি আরো উন্নত করা হয়েছে। এ ছাড়াও
১.         ডস মোডের প্রোগ্রামগুলি এই উইন্ডোজে চালানো যেত।
২.        এক সাথে একাধিক প্রোগ্রাম চালাতে সক্ষম ছিল।
৩.        আইকন ভিত্তিক প্রোগ্রাম ও তালিকা ভিত্তিক ফাইল ম্যানেজার ব্যবহৃত হয়েছিল।
৪.         এতে দেওয়া হয়েছিল – লেখালেখির জন্য ”নোট প্যাড”, ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের জন্য ”রাইট” আঁকাআকির জন্য পেইন্ট, এবং হিসাবের জন্য ক্যালকুলেটর আর গেইমের জন্য ছিল সলিটেয়ার খেলাটি।
উইন্ডোজ ৩.১         : ১৯১৯ সালের ৬ এপ্রিল মুক্তি পায়, এতে উইন্ডোজ ৩.০ সাথে যোগ করা হয় প্রিন্টযোগ্য ফন্ট,শব্দশোনা ও ভিডিও দেখার সুবিধা। তার পর অবশ্য ১৯৯৩ সালের ১১ আগষ্ট শুধুমাত্র সফ্ট্ওয়্যার গুলির আপডেট দিয়ে প্রকাশ করা হয় উইন্ডোজ ৩.১১।
win31 logo
উইন্ডোজ ৯৫          : ১৯৯৫ সালের ২৪ আগষ্ট এটি মুক্তি পায়। অপারেটিং সিষ্টেমটি নির্মানের সময় এর নাম দেওয়া হয়েছিল উইন্ডোজ ৪.০ বা ”শিকাগো”  উইন্ডোজ ৩.১ থেকে এই সিস্টেমের অগ্রগতি ছিল চোখে পরার মতো। উন্নতি হয়েছিল গ্রাফিক্যল ইন্টারফেসেও। প্রথম বারের মতো ফাইলের নাম ২৫৫ অক্ষরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সর্বপরি এমএস-ডস ও উইন্ডোজকে একীভূত করা হয় এ সিস্টেমে।
Win-95
উইন্ডোজ ৯৮          : উইন্ডোজ ৯৮ এর বেশ কয়েকটা সংস্করন রিলিজ হয়েছে। প্রথম বের হয় বেটা সংস্করন (১৯৯৭, ৩০ জুন) । পূর্ণ সংস্করন আসে ১৯৯৮ সালের (মে – জুন) । এটি ১৬ ও ৩২ বিটের হাইব্রিড সংস্করন। উইন্ডোজ ৯৮ দ্বিতীয় ও পূর্ণাংগ  সংস্করন রিলিজ হয় ২৩ এপ্রিল ১৯৯৯।
Windows-98
উইন্ডোজ মিলিনিয়াম (এমই) : এটির রিলিজ সময়  ১৯ জুন ২০০০, মূলত উইন্ডোজ ৯৮ এর দ্বিতীয় সংস্করনকে
উইন্ডোজ এমই দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়। এর সংগে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৫.৫ , উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার, মুভি মেকার সফটওয়্যার যুক্ত ছিল।
Win me
উইন্ডোজ ২০০০       : এই আপারেটিং সিস্টেম ক্লায়েন্ট এবং সার্ভার উভয় কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়। এটি ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০০০ সালে মুক্তি পায়।এর উন্নত সংস্করন উইন্ডোজ এনটি ৫.০ নামে পরিচিতি লাভ করে। এর চারটি সংস্করন বাজারে ছাড়া হয় – ১) প্রফেশনাল ২) সার্ভার ৩) এডভান্সড সার্ভার ৪) ডেটাসেন্টার সার্ভার । উইন্ডোজ ২০০০ সার্ভারের বাড়তি বৈশিস্ট্য ছিল যেমন এক্টিভ ডিরেক্টরি সেবা, বন্টিত ফাইল ব্যবস্থা ও অনাবশ্যক স্টোরেজ ভলিউমের ভুল ধরা।
Windows-2000-pro
উইন্ডোজ এক্সপি       : এই পর্যন্ত উইন্ডোজের  যতগুলি সংস্করন মুক্তি পেয়েছে, তার মধ্যে উইন্ডোজ এক্সপি সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এখনো বেশিরভাগ ইউজার উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহার করে, এবং ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। যদিও বাজারে তার চেয়ে অনেক বেশি ফিচার সম্পন্য অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে (যেমন- ভিস্তা, সেভেন, উবুন্টু , ডেবিয়ান, ম্যানড্রেক, ম্যাক)।
Windows-xp
উইন্ডোজ ভিস্তা         : এটি ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারী মুক্তি পায়। প্রথমে এটি লংহর্ন নামে পরিচিত ছিল।ভিস্তা এর পূর্বসূরী অপারেটিং সিষ্টেম উইন্ডোজ এক্সপি এর প্রায় পাঁচ বছর পর মুক্তি পেয়েছে। উইন্ডোজ ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম মুক্তির ক্ষেত্রে এটিই দীর্ঘ্যতম সময়।
Windows-Vista
উইন্ডোজ ৭    : মাইক্রোসফ্ট উইন্ডোজ, অপারেটিং সিস্টেমের একটি অন্যতম সংস্করন। এটি ২২ জুলাই ২০০৯ সালে মুক্তি লাভ করে। ৩২ বিট ও ৬৪ বিট দুই রকমের সংস্করনই রয়েছে। উইন্ডোজ ৭ কে উইন্ডোজ ভিস্তার আপডেট সংস্করন হিসাবে প্রকাশ করা হয়।এতে কিছু নতুন বৈশিস্ট যুক্ত করা হয়। বৈশিস্ট গুলি হলো ষ্পর্শ সুবিধা, হস্তরেখা পরিচিতি, ভার্চুয়াল হার্ড ডিস্ক সমর্থন করা, বুট সুবিধার উন্নতি করন, রিমোট এক্সেস এর ক্ষমতা ও কার্ণেলের উন্নত সংস্করন। কন্ট্রোল প্যনেলে যুক্ত করা হয় ক্লিয়ার টেক্সট টিউনার , ডিসপ্লে রং পরিমাপ করন উইজার্ড ছাড়াও অনেক গ্যাজেট, এইটি একই মেশিনে চালাতে উইন্ডোজ টাচ মোড, সহ একাধিক উইন্ডোজ পরিবেশ, অনুমোদন করে।
Windows-7-
উইন্ডোজ ৮  : মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর পরবর্তী সংস্করণ, যা উইন্ডোজ ৭ কে অনুসরণ করে।এই সংস্করণে পূর্ববর্তী সংস্করণ গুলো থেকে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে । বিষেশত এটাতে পূর্বের ইন্টেল ও এএমডি এর এক্স৮৬ মাইক্রো প্রসেসর সাপোর্ট ছাড়াও এআরএম মাইক্রো প্রসেসর সাপোর্ট যোগ করা হয়েছে। এতে টাচ স্ক্রিন ইনপুট এর জন্য ডিজাইনকৃত নতুন একটি ষ্টার্ট স্ক্রিন যোগ করা হয়েছে যা গতানুগতিক স্টার্ট মেনুকে প্রতিস্থাপন করে
Windows-8
উইন্ডোজ ৮.১            : উইন্ডোজ ৮.১ হল  মাইক্রোসফট  উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের উইন্ডোজ ৮ এর পরবর্তী সংস্করণ, যা উইন্ডোজ ৭ ও ৮ কে অনুসরণ করে। এটি ২০১৩ সালে রিলিজ হয়। এটির বৈশিষ্ট হচ্ছে উইন্ডোজ ৮ এর সাথে উইন্ডোজ ৭ এর স্টার্ট মেনু  সংযোজন।
উইন্ডোজ ১০    : উইন্ডোজ ১০ হচ্ছে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ। এটি উন্মোচিত হয় ২০১৪ সালের ১৪-ই সেপ্টেম্বর এবং ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই এটি মুক্তি পায়।উইন্ডোজ ১০-এর কথা প্রথম আভাস দেয়া হয় সফটওয়্যার ও ওয়েব ডেভেলপারদের জন্য ২০১৪ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত মাইক্রোসফটের বার্ষিক বিল্ড সম্মেলনে। উইন্ডোজ ১০ এর লক্ষ্য মূলত ব্যবহারকারীর নিজস্ব পছন্দনীয় শর্টকামিংগুলি সঠিক ব্যবস্থা করা, যা প্রথম উইন্ডোজ-৮ এর মাধ্যমে পরিচয় করানো হয়েছিলো। এটির সাথে অতিরিক্ত মেশিন যোগ করার মাধ্যমে ডেস্কটপ কম্পিউটার ও ল্যাপটপের মত টাচস্ক্রিন নয় এমন ডিভাইসে ব্যাবহারকারী অভিজ্ঞতা উন্নয়ন করা হয়েছে। এতে আরও রয়েছে উইন্ডোজ স্টোরের অ্যাপ রান করার ক্ষমতা।
Windows-10